গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে গৃহবধূ ইয়াসমিন বেগমের মৃত্যু । 203 0
গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে গৃহবধূ ইয়াসমিন বেগমের মৃত্যু ।
গাজীপুর মহানগর এলাকায় পুলিশ হেফাজতে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি গ্রেফতারের পর অসুস্থজনিত কারণে ওই গৃহবধূ মারা গেছেন।
নিহত ইয়াসমিন বেগম ভাওয়াল গাজীপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের ছেলে আরাফাত রহমান জিসান বলেন, আমার বাবা আব্দুল হাইকে মাদক মামলায় গ্রেফতার করতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মহানগর ডিবি পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক নুরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আমাদের বাড়িতে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আব্দুল হাইকে না পেয়ে কলাপসিবল গেট ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ডিবির সদস্যরা আমার মা ইয়াসমিনকে মারধর করে এবং আটক করে নিয়ে যায়। পরে মায়ের মোবাইলে ফোন দিলে ডিবির সদস্যরা আমাকে ডিবি অফিসে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আমাকে ডিবি অফিসে না গিয়ে হাসপাতালে যেতে বলে। হাসপাতালে গেলে পুলিশ আমাকে ভেতরে যেতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা জানায়, আমার মা মারা গেছেন। মা হৃদরোগী ছিলেন।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মনজুর রহমান পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদক মামলার আসামি ইয়াসমিনের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকার বাড়িতে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে- এমন খবরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে ইয়াসমিনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজত থেকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার মাদক ব্যবসায়ী স্বামী পালিয়ে যায়। গ্রেফতারের পর ইয়াসমিনকে গোয়েন্দা অফিসে নিলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পরীক্ষা নিরীরক্ষার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ইয়াসমিনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে ইয়াসমিন মারা যান। ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০টা ১০মিনিটে ইয়াসমিনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তার বুকে ব্যথা ও প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ছিল। পরে তার ইসিজিও করা হয়। লক্ষণ থেকে প্রাথমিকভাবে বুঝা গেছে তিনি স্ট্রোক করেছেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। একপর্যায়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।